Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ভাষা ও সংষ্কৃতি

      সীতাকুন্ড উপজেলার ভূ-প্রকৃতি ও ভৌগলিক অবস্থান এই উপজেলার মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতি গঠনে ভূমিকা রেখেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই উপজেলাকে ঘিরে রয়েছে পাহাড় আর সমুদ্র।এখানে ভাষার মূল বৈশিষ্ট্য বাংলাদেশের অন্যান্য উপজেলার মতই, তবুও কিছুটা বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়।চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা এ অঞ্চলের অনন্য বৈশিষ্ট্য।বিশেষতঃ সন্দীপ ,সীতাকুন্ড,চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের সংমিশ্রনে সীতাকুন্ডের ভূ-প্রকৃতি নির্ধারিত হয়েছে।

 

   ভূতত্ত্ববিদদের মতানুসারে ফেনী নদী থেকে আরম্ভ করে  চন্দ্রনাথ পাহাড় তথা সীতাকুন্ড পাহাড় শ্রেনীর পশ্চিমাঞ্চল, দক্ষিনে কর্ণফলী পর্যন্ত এলাকাটি প্রাচীন কালে সমুদ্রের জলরাশির তলায় নিমজ্জিত ছিল । পরবর্তীতে ফেনী নদীর স্রোতধারা এবং সীতাকন্ড  পার্বত্য অঞ্চল থেকে  প্রবাহিত বিভিন্ন  ছরা স্রোতধারার মাধ্যমে বাহিত পলি মাটি দ্বারা এই অঞ্চল গঠিত হয় । প্রথম  দিকে  এই  এলাকাটি  জঙ্গলাকীর্ণ  ছিল,  বাসপোয়োগী ছিল না । প্রকৃতির  ক্রমবিবর্তনে এই  পাহাড়ী অঞ্চলটি  পশ্চিমদিকে  সম্প্রসারিত হয় এবং কালক্রমে  বাসপোয়োগী  হয়ে উঠে।  প্রথম দিকে অঞ্চলটিতে আদি অধিবাসীরাই বসবাস করত । সেই  আদি অধিবাসিদের  বংশধরেরা আজও সীতাকুন্ড পার্বত্য অঞ্চলে  ছড়িয়ে ছিটিয়ে  বসবাস  করছে । আরও পরে  ত্রিপুরা ,নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার  সীতাকুন্ড পাহাড়ের  পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত  অঞ্চল হতে  আগত জনগোষ্ঠী  জঙ্গলকেটে  এই অঞ্চলকে বাসপযোগী করে তোলে । এই  অঞ্চলের মালিকানা  নিয়ে পার্বত্য ত্রিপুরা মহারাজ  এবং  আরাকান রাজার সাথে অনেক বার দ্বন্দ্ব হয়েছে। কখনও আরাকান রাজারা  এই অঞ্চল শাসন করেছে । আবার কখনও পার্বত্য ত্রিপুরার আগরতলা মহারাজা এ অঞ্চল শাসন করেছে।  আরাকান রাজাদের শাসনামলে এখানে মগেরা বসতি বিস্তার করে ।  আগরতলা মহারাজার শাসনামলে ত্রিপুরার জনগোষ্ঠিও এখানে বসবাস করে।  অপর পক্ষে পর্তুগীজ জলদস্যুরা সমুদ্র পথে চট্টগ্রাম এসে  চট্টগ্রামকে  পোর্টো গ্রান্ডো নাম করন করে সন্ধীপ  দ্বীপকে  কেন্দ্র করে  তারা  এতদ অঞ্চলে বসবাসও করেছে। সমসায়িক সময়ে আরবেরাও সমুদ্র পথে এ অঞ্চলে  আগমন করেছে। এবং  কেউ কেউ স্থানীয় ভাবে  বসতি  স্থাপনও করেছিল।

 

      যারা নোয়াখালী  জেলার দাদরা  থেকে  এখানে এসে বসবাস করেছিল তারা  দারাইল্যা হিসেবে পরিচিত যারা তারাসরাইল থেকে এদিকে এসে  বসতি  স্থাপন করেছিল তারা সরাইল হিসেবে পরিচিত । যারা সন্ধীপ থেকে এদিকে এসে  বসতি  স্থাপন করেছিল তারা সন্ধীপী হিসেবে পরিচিত। উত্তর ও মধ্য চট্টগ্রাম থেকে যারা এখানে এসে  বসতি  স্থাপন করেছিল তারা চট্টগ্রামী হিসেবে পরিচিত। বলতে গেলে বিভিন্ন শোনিত ধারার মিশ্রণে এতদাঞ্চলে  একটি শংকর জনগোষ্ঠি  গড়ে ওঠে এবং তার প্রমান পাওয়া যায় এ অঞ্চলের  অধিবাসীদের ভাষা,সংস্কৃতি চালচলন ইত্যাদিতে। যাতে নোয়াখালী,কুমিলস্নার প্রভাব পরিলক্ষিত হয়-যা একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের পরিচায়ক।